Rajshahi Cadet College (RCC)
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ (Rajshahi Cadet College)
রাজশাহী জেলা সদর থেকে ২৫ কিমি দূরে সারদার মুক্তারপুরে পদ্মার পাড়ে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ অবস্থিত। ১১০ একর জায়গা নিয়ে ১৯৬৬ সালের ১১ ফেব্রুআরি যাত্রা শুরু করে উত্তরবঙ্গের এই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি। কলেজের
সামনে দিয়ে বয়ে চলেছে প্রমত্তা পদ্মা। শুরুতে এর নাম ছিল আইয়ুব ক্যাডেট কলেজ। ্উপমহাদেশের প্রথম ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ১৯৬৪ সালের ১১ নভেম্বর তিনি এটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৬৬ সালের ১ ফেব্রুআরি তিনি এটি উদ্বোধন করেন। এটি বাংলাদেশের চতুর্থ আর পাকিস্তান আমলের
শেষ ক্যাডেট কলেজ। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন মোঃ সাইদ পিএএফ। তিনি ১৯৬৬ সালের ১ নভেম্বর তাঁর কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেন। কলেজের প্রথম শিকক্ষক ছিলেন সালেহ উদ্দিন সিনহা। প্রথম বাঙালি অধ্যক্ষ ছিলেন মোঃ বাকিয়াতুল্লাহ। তিনি ১৯৭০ সালে কলেজে যোগদান করেন। প্রথম Adjutant ছিলেন ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ। তিনিও ১৯৭০ সালে কলেজে যোগদান করেন।১৯৭১ সালের ৯ মার্চ সরকার কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেন। তারপরেও ৭ জন ক্যাডেট যুদ্ধে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলেজে অবস্থান করেন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ কলেজে পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মুক্তযুদ্ধের সময় স্থানীয় মুক্তিকামী শতশত জনগণ ক্যাডেট কলেজে প্রবেশ করে কলেজের অধ্যক্ষ সহ অনান্যাদের সাথে আলোচনা করে কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তারপুর ক্যাডেট কলেজ’ নামকরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই নামেই পরিচিত ছিল কলেজটি। পরে স্বাধীনতার পরে নাম পরিবর্তন করে ‘রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ’ নামকরণ করা হয়। উল্লেখ করতে হয় যে, মহান মুক্তিযুদ্ধে এই ক্যাডেট কলেজের অসামান্য অবদান ছিল। বঙ্গবন্ধু'র ডাকে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ন্যায় এই কলেজের অনেক ক্যাডেট, শিক্ষক ও স্টাফ যুদ্ধে অংশ নেন। রণক্ষেত্রে মোট আট জন ক্যাডেট আর দশ জন স্টাফ শহীদ হন।মুক্তিযুদ্ধে ক্যাডেট কলেজের আরো অবদানের কথা থাকছে মুক্তিযুদ্ধে চারঘাট অংশে।
বর্তমানে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে আছেন কর্ণেল মো: হাবিব উল্লাহ। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। কলেজের প্রাণকেন্দ্র প্রশাসনিক ভবনের নামকরণ করা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেস পর্যায়ে এসেএই সেক্টরে নিজের জীবন উৎসর্গকারী বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর’-্এর নামে। কলেজের অডিটোরিয়ামটি মোট ৬৫০ লোক ধারণ করতে সক্ষম। কলেজে মোট তিনটি হাউজ আছে। কলেজের অডিটোরিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল-্এর নামে। হাসপাতালটির নামকরণ করা হয়েছে ন্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ আর কলেজের মেসটির নামকরণ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান-এর নামে। আর তিনটি যথাক্রমে খালিদ বিন ওয়ালিদ (খালিদ হাউজ), মোহাম্মদ বিন কাসিম ( কাসিম হাউজ) ও তারিক বিন জিয়াদ (জিয়াদ হাউজ)-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৭২ সালে কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের নিয়ে Old Sardah Cadet Association (OSCA) গঠন করা হয়। প্রথম কমিটি গঠন করা হয় ৬ জুন ১৯৭২ সালে। বর্তমানে এটি Old Rajshahi Cadet Association (ORCA) নামে পরিচিত। গত বছর মার্চে ORCA ৫০ সনবছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে তিন দিন ব্যাপী বর্ণাঢ়্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও সালাম প্রহণ করেন। পরে তিনি সূবর্ণ জয়ন্তীর কেক কাটেন।
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ সারদা-চারঘাটকে পুরো দেশের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। এটি চারঘাটবাসীর গর্বের প্রতিষ্ঠান। এখানকোর ক্যাডেটরা আর্মি, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী সহ দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কর্তা ব্যক্তি হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
আরো দেখুন:
সরদহ সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
সরদহ মহাবিদ্যালয়
সারদা পুলিশ একাডেমী
চারঘাটের পদ্মা নদী
প্রাচীন চারঘাটের ঘাট সমূহ
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ:
ঐতিহ্যের চারঘাট; ডা: মো: আব্দুল মালেক
মোস্তাফিজ; ক্যাডেট কলেজ ব্লগ
ব্লগ লিখেছেন মোঃ আরিফুল ইসলাম অভি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
#নিরিবিলি
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন